Swami Gokulananda ji

জপসাধনা

মন্ত্রে যদি বিশ্বাস থাকে, যান্ত্রিকভাবে বারবার মন্ত্র উচ্চারণ করলেও পরিণামে তার ফল পাওয়া যায়, কারণ দিব্য নামের মধ্যে মহতী শক্তি নিহিত অাছে ৷ বিভিন্ন ধরণের চিন্তাকে প্রতিহত করতে এই নাম খুব সাহায্য করে ৷ অামাদের সমস্ত ধর্মাচার্যের মতে, অাধ্যাত্মিক অনুভূতি লাভের জন্য অথবা অন্তর্নিহিত দিব্যভাবের বিকাশের জন্য জপ—সাধনা অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপায় ৷

অামাদের প্রয়োজন অান্তর শুদ্ধি ৷ অামাদের দেহ-মন সম্বলিত অবয়বটির যথার্থ রূপান্তর দরকার ৷ অামাদের চিন্তায় বাক্যে এবং কাজে পবিত্রতা রক্ষার জন্য সচেষ্ট না হলে অাধ্যাত্মিক বিকাশ ঘটবে না ৷

কিন্তু কিভাবে পরিপূর্ণ পবিত্রতা লাভ হতে পারে ?

সঙ্ঘের প্রথম অধ্যক্ষ স্বামী ব্রহ্মানন্দজী একবার বলেছিলেন, “অামার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি জপ-সাধনা না করলে কেউ সম্পূর্ণ পবিত্রতা লাভ করতে পারে না ৷”
স্বামী বিশুদ্ধানন্দজীও বলতেন, মনের পবিত্রতা লাভের জন্য রোজ নির্দিষ্ট সংখ্যক জপ করা উচিত ৷ বলেছিলেন, অন্ততঃ দশ হাজার জপ করা দরকার ৷

সঙ্ঘের অারও একজন শ্রদ্ধাভাজন সন্ন্যাসী স্বামী সিদ্ধেশ্বরানন্দজী একই ভাবে নাম জপের উপর জোর দিতে বলতেন ৷ তিনি অামাকে লিখেছিলেন, “খুব অান্তরিকভাবে অধ্যত্ম-জীবনটি গড়ে তোল ৷ শ্রীরামকৃষ্ণের মতে কলিযুগে নাম জপই শ্রেষ্ঠ সাধনা ৷ অামি জপ-সাধনার গোঁড়া সমর্থক ৷”

                                      — স্বামী গোকুলানন্দ ৷

Swami lokeswaranandaji

ঈশ্বরচিন্তারস্থানকালনেই

স্বামী লোকেশ্বরানন্দ :—

ঈশ্বরচিন্তার আবার স্থান, কাল কী ? সবসময়, সব অবস্থাতেই তা করা চলে এবং তা করাই উচিত ৷ এই প্রসঙ্গে একটি ঘটনার কথা বলি ৷

একবার ট্রেনে আসছি ৷ সেই ট্রেনে কাশীর বিখ্যাত তবলিয়া শামতাপ্রসাদও উঠেছেন ৷ তখন অবশ্য তাঁকে আমি চিনতাম না ৷ তখন তাঁর চেহারা ভাল ছিল ৷ তা, সাধু দেখে আমাকে তিনি খুব সম্মান করছেন ৷ হঠাৎ দেখি, তিনি তাঁর বাক্সে খুলে তাঁর ইষ্টদেবতা কৃষ্ণের ছবি বের করে বলছেন — স্বামীজী, আমি এইখানে একটু পূজা করব ৷ আমরা একই কুপেতে ( coupe ) ছিলাম ৷ তা আমি বললাম — বসে পড়ুন ৷ তিনিও সঙ্গে সঙ্গে বসে তাঁর পূজা শুরু করলেন ৷

সঙ্গীতশিল্পী বা বাজিয়েদের অনেকেরই একটা হাতবাক্স থাকে ৷ আলি আকবরেরও ( বিখ্যাত সরোদিয়া ) ছিল ৷ তাতে সব দেবদেবীর মূর্তি ৷

যাঁরা সাধক-শিল্পী, তাঁদের ভাবটা হলো — আমি আপনাদের গান বা বাজনা শোনাচ্ছি না, আমি শোনাচ্ছি আমার ইষ্টদেবতাকে ৷ সুরের মাধ্যমে আমি তাঁরই সেবা করছি ৷

সেবার আবার স্থান-কাল কী ?

                         — স্বামী লোকেশ্বরানন্দজী ৷

Letter from Swami Premeshanandaji’s collection

স্বামী প্রেমেশানন্দজীর পত্র-সংকলন হইতে :~
~~~~~~~~

তুমি এবার ঠিক বুঝিয়াছ, অন্তর্জগতে প্রবেশ করা দরকার ৷

মনের বার আনা যার অন্তরে নিবদ্ধ থাকে, বাকি চার আনাতে সে সংসার তোলপাড় করিতে পারে ৷

আর যার সকল মনই বাহিরে সে এক বলদের সমান খাটিতে পারে মাত্র ৷

চিদাকাশে অসীম আনন্দের সন্ধান যেদিন তুমি পাইবে সেদিন রামকৃষ্ণের যন্ত্র হইবে ; তার পূর্বে যাহা করিবে বা করিতে চাহিবে তাহা পাগলামি মাত্র জানিবে ৷

letter from Swami Premeshanandaji’s collection

স্বামী প্রেমেশানন্দজীর পত্র-সংকলন হইতে :~
~~~~~~~~

‘গুরু মিলে লাখ লাখ চেলা না মিলে এক’ ৷

পরোপদেশে পাণ্ডিত্যং সর্বেষাং সুকরং নৃণাম্ ৷ First be, then make. Be and make ৷ জগতের সব মহাপুরুষই আগে মহৎ হয়েছেন, তারপর শিক্ষা দিয়েছেন ৷

‘নিজে শুতে ঠাঁই নাই শঙ্করাকে ডাকে ৷’
কথামৃত ১ম ভাগ প্রথমেই দেখ — কলকাতার লোকের ঐএক, লেকচার লেকচার ৷ নিজেকে কে শেখায় তার খবর নাই ইত্যাদি, রজোগুণী লোক শুধু বাইরে দেখানোর জন্য ব্যস্ত ৷ ঠাকুরের সেই ঝিনুকের উপমা স্মরণ কর ৷ স্বামীজী যেসব কথা তাঁর গুরুভাইদের বলতেন সেসব আমাদের পক্ষে প্রযোজ্য নহে ৷

Right thinking and right activity বড় দুর্লভ ৷…দেশের অবস্থা এত খারাপ যে, মন কিছুতেই ভাল রাখিতে পারি না ৷

মানুষ পশুর ন্যায় অ-বুদ্ধিবশে অসহায় ৷ সর্বত্র জড়তা, তমোগুণ ৷ যেটুকু রজঃ দেখা যায়, তাও তমোপ্রধান ৷ শ্রীরামকৃষ্ণপন্থীরা নিরুদ্দেশ ৷ তোমরা তাড়াতাড়ি নিজ সমস্যা মিটাও — সমাজের সম্মুখে লাফিয়ে পড় ৷

letter from Swami Premeshanandaji’s collection

স্বামী প্রেমেশানন্দজীর পত্র-সংকলন হইতে :~
~~~~~~~~

মুক্তিলাভের উপায় সন্ন্যাস ৷ কিন্তু তাহার সাধন বড়ই কঠিন ৷ ‘ক্ষুরস্য ধারা নিশিতা দূরত্যয়া দুর্গং পথস্তৎ কবয়ো বদন্তি ৷’ মহাবীর না হইলে, সিংহের ন্যায় বলবান ও তেজস্বী না হইলে এই পথে অগ্রসর হওয়া কঠিন ৷ ‘নির্গচ্ছতি জগজ্জালাৎ পিঞ্জরাদিব কেশরী ৷’ আমরা ঠিক একটি ঐন্দ্রজালিক মায়ায় বাঁধা পড়িয়াছি ৷ এই বন্ধন ছিন্ন করিবার চেষ্টা করিলেই মহামায়া নানাপ্রকার বাধা উপস্থিত করেন ৷ সব বাধা যে ডিঙাইতে পারে, সেই মুক্ত হইবে ৷

এই পথের প্রথম বাধা পিতা-মাতার সংসার ৷ পিতা-মাতা, আত্মীয়স্বজন এবং স্বজাতির সংস্রব পরিত্যাগ করা মানুষের পক্ষে বড়ই কঠিন ৷ ভগবানের বিশেষ আকর্ষণ অনুভব না করিলে, এই বন্ধন ছিন্ন করা যায় না ৷ সংসারের হাঙ্গামা এড়াইবার জন্য আজকাল কেহ কেহ বাপের ভিটা ছাড়িয়া যায় বটে, কিন্তু বাড়ির অভ্যাস, বংশের দোষগুণ, শিক্ষার দোষগুণ কিছুতেই ছাড়িতে পারে না ৷ বড় ঘরের লোকদের, বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ শিক্ষাপ্রাপ্তদের দোষগুণ সর্বাপেক্ষা স্পষ্ট হইয়া উঠে ৷

জ্ঞান-বিচারের দ্বারা আমি যে জন্ম-মরণরহিত, সর্ব-সংস্কারবিমুক্ত, নিত্যশুদ্ধ-বুদ্ধ-মুক্ত চৈতন্যস্বরূপ তাহা বুঝিলে ঐ সব দোষগুণের হাত হইতে নিষ্কৃতি পাওয়া যায় ৷

এই পথের দ্বিতীয় বাধা, গুরুভগিনীদের সংস্রবে, গুরু প্রতিষ্ঠিত আশ্রমে সংসার আর এক নূতনরূপে আসিয়া সাধিকাকে ঘেরিয়া ফেলে ৷ পিতৃগৃহের মতন এইখানেও স্নেহ-মমতা, নিন্দা-প্রশংসা ‘আশ্রম-সংসার’ নিয়া সাধককে অনেক সময় মাতিয়া উঠিতে দেখা যায় ৷

কে কি করিল, কে কি বলিল, এই নিয়া জটলা করিতে খুবই ভাল লাগে ৷ কোন কোন সমভাব নিয়া ছোট ছোট দল গড়িয়া উঠে ৷ একদলের সঙ্গে অন্যদলের ঠোকাঠুকি লাগে ৷ যেমন তরকারিতে একটু ঝাল না হইলে খাইতে ভাল লাগে না, ঠিক সেইরূপ জীবনে দুঃখবেদনা, উত্তেজনা না থাকিলে জীবন একঘেয়ে হইয়া উঠে ৷

তাই তো প্রাকৃতিক নিয়মে এইসব মিষ্টি, ঝাল, তেতো, কষা প্রভৃতি বিবিধ স্বাদের ব্যবস্থা রহিয়াছে । এই স্বাদ-বিস্বাদের হাত হইতে নিজেকে রক্ষা করিবার জন্য, মুমুক্ষুদের সর্বোত্তম গ্রন্থ শ্রীশ্রীগীতার আশ্রয় নিতে হইবে ৷ শ্রীশ্রীগীতা খুলিয়া নিম্নলিখিত শ্লোকগুলি বারংবার পড়, অর্থটি ভাল করিয়া বুঝিবার চেষ্টা কর এবং উহা জীবনে পরিণত করিবার জন্য প্রাণপণ উদ্যমে রত হও ৷ শ্লোক ২/১৪ | ২/৫৭ | ২/৬৪ | ২/৭১ | ১২/১৫ | ১২/১৯ |

astro remedy

VEDIC EXPERIENCE ( ANUSHREE ROUT)

If someone from your family is suffering a disease for a long time or hospitalised, pour some sesame oil in a plate and let them see their reflection in it. Make a wick with black sesame seeds filled and tied up in a small black piece of cloth and place it on an iron lamp filled with pure gingelly oil. Light this lamp within a temple premises or light it in the south direction of your house. Wait till the wick burns off and pray to lord Saturn for quick relief from the disease in the name of the patient. Do not eat the prasad in the temple if you go to light this lamp. You can also light a clay lamp if you can’t find that of Iron.

Best done on Saturday and during shani pradosh, shani jayanti or during certain auspicious months. This is very good for those under astham shani, janma shani or going through chronic diseases under a Saturn period.

VedicExperience

SWAMI PREMESHANANDAJI’S LETTER

স্বামী প্রেমেশানন্দজীর পত্র-সংকলন হইতে :~
~~~~~~~~

ঠাকুর, তুমি বলিয়াছ, ‘ভোগান্ত না হইলে ব্যাকুলতা হয় না ৷’

তাহলে তো আমার মতো লোকের আর জ্ঞানলাভের সম্ভাবনা নাই ৷ আমার মনে অনন্ত ভোগবাসনা, তাহা কবে অন্ত হইবে, কবে তোমার দর্শন পাইবার জন্য ব্যাকুলতা হইবে ৷

ভক্তিতে বাসনার ক্ষয় হয় বটে কিন্তু ভক্তি তো শুদ্ধ চিত্তেই উদয় হয় ৷

বহুকাল পুণ্যকর্ম করিলে, মনের হীন বাসনা যায়, তখন তোমার দিকে মনে হয় ৷

“যেষাং ত্বন্তগতং পাপং জনানাং পুণ্যকর্মণাম্ ৷
তে দ্বন্দ্বমোহনির্মুক্তা ভজন্তে মাং দৃঢ়ব্রতাঃ ৷৷” ( গীতা — ৭|২৮ )

এইসব বিচার করিলে আমি সাহস হারাইয়া ফেলি ৷

তোমার অমোঘ নিয়ম কে লঙ্ঘন করিতে পারে ?

কিন্তু প্রভু, তুমি জীবের দুঃখে কাতর হইয়া জীবের অসামর্থ্য দেখিয়াই তো মানুষ সাজিয়া আসিয়াছ ৷

আমার অসহায় অবস্থা দেখিয়া তোমার অবশ্য দয়া হইবে, এই ভরসায় আমি তোমার চরণে আত্মসমর্পণ করিতেছি ৷

তুমি আমার বিষয়-বাসনা দূর কর ৷

SWAMI PREMESHANANDAJI’S LETTER

স্বামী প্রেমেশানন্দজীর পত্র-সংকলন হইতে :~
~~~~~~~~

ঠাকুর, মানুষের সাধনফল ‘ঘোগ’ দিয়া বাহির হইয়া যাইবার কথা তুমি বলিয়াছ ৷

আমার ক্ষুদ্র শক্তি, অল্প জ্ঞান দিয়া কি-ই বা সাধন করিব — তাহাও যদি ক্ষয় হইয়া যায় তবে তো ব্যর্থ শ্রমই সার হইবে, মন যে কত সূক্ষ্ম পথ ধরিয়া দেওয়া বস্তু ফিরাইয়া নেয় তাহা ভাবিয়া স্তম্ভিত হই ৷

দান নিজের হাতে করিতে যে ইচ্ছা হয়, তাহার অন্তরালে থাকে দান গ্রহীতার প্রেম-দৃষ্টিপাতের লোভ ৷

হায় প্রভু, তোমার এমনই মোহিনী মায়া !

সামনে দাঁড়াইবার লোভ যে কতভাবে ছলনা করে তাহা যেন প্রভু, আমার চোখে ধরা পড়ে ৷

তুমি কৃপা কর, ছলনা হইতে রক্ষা কর ৷

SWAMI PREMESHANANDAJI’S LETTER

স্বামী প্রেমেশানন্দজীর পত্র-সংকলন হইতে :~
~~~~~~~~

ঠাকুর, বাসনা নির্মূল করা অতীব কঠিন কার্য তাহা আমি বুঝি ৷

যদি মানুষের হিত বাসনায় মন পূর্ণ হইয়া যায়, তবে এই তুচ্ছ দেহের মঙ্গলামঙ্গলে মন বিচলিত না হইতে পারে ৷

আর, বর্তমান সময়ে মানুষের দুরাবস্থার অন্ত নাই ৷

কোনও উপায়ে মানুষের সেবায় যদি জীবন নিযুক্ত রাখিতে পারি, তবে হয়তো তোমার কৃপার অধিকারী হইতে পারিব ৷

তাই প্রভু, প্রার্থনা করি আমার হীনবুদ্ধি দূর কর ৷

পরার্থে প্রাণদান করিবার সাহস দাও ৷

এই দেহ নরকবাস, এই দেহাত্ববুদ্ধি দূর কর, প্রভু ৷

সর্বভূতে তুমি আছ শুনিয়াছি কিন্তু আমি স্থূলদৃষ্টি আধার দেখি, আধেয় দেখি না ৷

আমি না দেখিলেও তুমি তো সর্বভূতে আছ ৷

জীব সেবায় তুমি প্রীত হবে ৷ তাই ঐ সেবার অধিকার দিয়া কৃতার্থ কর ।

FROM SWAMI PREMESHANANDAJI’S LETTER

স্বামী প্রেমেশানন্দজীর পত্র-সংকলন হইতে :~
~~~~~~~~

হে শুদ্ধ চৈতন্য, আমার এই মলিন মন নিয়া কোন যোগপথ অবলম্বন করিতেই সাহস হয় না ৷

যদি জ্ঞান বিচার করি পদে পদে ভুল বুঝিবার ভয় এবং কিছু বুঝি বা না বুঝি অন্য অপেক্ষা বেশি শিখিয়া ফেলিয়াছি ভাবিয়া অভিমানী হইয়া উঠিব ৷

ধ্যান করিয়া হয় মাথা গরম করিব না হয় তোমায় ছাড়িয়া স্থির মনের স্বস্তি রসে তমোগুণে আচ্ছন্ন হইব ৷

ভক্তিসাধন তো একান্তই অসম্ভব ৷

তুমি কে, কি, কেমন কিছুই জানি না ; শুধু দশ জনের সঙ্গে মিশিয়া নাম জপে, গুণকীর্তনে, প্রসাদভক্ষণে, ভক্তসঙ্গে গুলতানে ও গুলজারে ভণ্ডামি করাই দেখি, আমার ভক্তি সাধন — এতে কি শান্তি হবে ?

অতএব, হে বরেণ্য, তুমি আমার বুদ্ধিকে নিয়মিত কর, তোমার পথে চালাও — ধিয়ো যো নঃ প্রচোদয়াৎ ৷ আমি তোমার চরণে শরণ নিলাম, তোমার পদে আমার মন, প্রাণ, শরীর অর্পণ করিলাম ৷

Design a site like this with WordPress.com
Get started